কভিড–১৯ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় আন্তর্জাতিক চার রুটে ফ্লাইট স্থগিতের মেয়াদ আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজের পরিবহন সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। এছাড়া যাত্রী সংকটে বাতিল করা হয়েছে ঢাকা–সিলেট–লন্ডন–সিলেট রুটের ২৩ ও ৩০ জানুয়ারির ফ্লাইট।
গতকাল এক ঘোষণায় বিমান জানিয়েছে, আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার, সৌদি আরবের মদিনা, নেপালের কাঠমান্ডু এবং কুয়েত সিটির ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি সাপেক্ষে ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত পরে জানানো হবে। বর্তমানে যুক্তরাজ্য, জেদ্দা, রিয়াদ, দাম্মাম, মাস্কাট, দুবাই, দোহা, সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর ও কলকাতায় চালু রয়েছে বিমানের নিয়মিত যাত্রীবাহী ফ্লাইট।
এর আগে নভেল করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক একটি নতুন ধরন যুক্তরাজ্য থেকে ছড়াতে শুরু করলে গত ২১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে এক সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সৌদি আরব সরকার। এরপর তা আরেক সপ্তাহ বাড়ানো হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মামগামী সব ফ্লাইট বাতিল করে দেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস। পরবর্তী সময়ে সৌদি আরব সরকার আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ায় ৬ জানুয়ারি থেকে ওইসব গন্তব্যে নিয়মিত যাত্রী পরিবহন শুরু করে বিমান। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে জেদ্দায় চারটি, রিয়াদে চারটি ও দাম্মামে তিনটি ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করছে বিমান।
এদিকে করোনা মহামারীর শুরুতে গত বছর ২১ মার্চ থেকে মাস্কাটগামী ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছিল বিমান। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে গত ২ অক্টোবর পুনরায় চালু হয় মাস্কাটের ফ্লাইট। তবে কভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন দ্রুত বিস্তার ঘটায় ফ্লাইট চলাচলে আগের নিষেধাজ্ঞা ফেরত আনে ওমান। সেই কারণে গত ২২ ডিসেম্বর থেকে এক সপ্তাহের জন্য মাস্কাটগামী বাংলাদেশ বিমানের সব ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল। পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় ওমান সরকার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ ডিসেম্বর রাত থেকে বিমানের মাস্কাটগামী ফ্লাইটগুলো আবার নিয়মিত চলাচল শুরু করে। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে মাস্কাটে দুটি এবং চট্টগ্রাম থেকে মাস্কাটে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।
উল্লেখ্য, কভিড–১৯ মহামারী দেখা দিলে গত ২৪ মার্চের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায় বিমানের। পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হওয়ায় এরই মধ্যে কয়েকটি রুটে ফের ফ্লাইট চালু করেছে বিমান। তবে ব্যাংকক, ম্যানচেস্টার, কাঠমান্ডু ও কুয়েত রুটে এখনো ফ্লাইট চালু করেনি বিমান। এর আগে গত ১ নভেম্বর এসব রুটের ফ্লাইট স্থগিতের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করে বিমান। পরবর্তী সময়ে আরেক দফায় ফ্লাইট স্থগিতের সময় বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ায় গত ২৪ মার্চ সব আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। পরবর্তী সময়ে ১ জুন থেকে সীমিত পরিসরে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয় সংস্থাটি। যদিও বিভিন্ন দেশের বিধিনিষেধের কারণে যাত্রী কম থাকায় আগের তুলনায় খুবই সীমিতসংখ্যক ফ্লাইট চালু করেছে বিমান।