করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বময় কতজনই না চাকরি হারিয়েছেন। মিসবাহ উল হকের বেলায় যেন হলো উল্টোটা। বলতে গেলে করোনার কারণেই চাকরিটা এবারের মতো বেঁচে গেল পাকিস্তান দলের হেড কোচের!
নিউজিল্যান্ড সফরের ব্যর্থতার পর মিসবাহর পদ নিয়ে টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তানের কয়েকটি গণমাধ্যমে খবর বেরোয়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আসন্ন সিরিজের আগেই বরখাস্ত হচ্ছেন মিসবাহ।
কিন্তু পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) এবার সাফ জানিয়ে দিল, বর্তমান টিম ম্যানেজম্যান্টের ওপর তারা আস্থা রাখতে চায় সামনের সিরিজেও। বোর্ডের এমন সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছে ক্রিকেট কমিটি। ফলে এবারের মতো বেঁচে গেল মিসবাহর চাকরিটা।
আজ (মঙ্গলবার) ক্রিকেট বোর্ড কমিটি নিউজিল্যান্ড সফরসহ পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণে বসেছিল। তার আগেই খবর বেরিয়ে পড়ে, মিসবাহ কোচ থাকছেন না। ২৬ জানুয়ারি থেকে শুরু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে ভারপ্রাপ্ত হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইউনিস খান।
তারপর বিদেশি কোচের দিকে ঝুঁকবে পিসিবি। বিদেশি কোচ নিয়োগ দিতে বিজ্ঞপ্তি দেয়ারও পরিকল্পনা হয়েছে বলে জানা যায় বিভিন্ন প্রতিবেদনে। এমনকি গ্র্যান্ট ফ্লাওয়ার বা গ্যারি কারস্টেন কোচ হয়ে আসতে পারেন, এমন খবরও এসেছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমে।
তবে সব গুঞ্জনকে এক ঝটকায় বাতাসে উড়িয়ে দিল পিসিবি। জানাল, মিসবাহকে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের আগে সরিয়ে দেয়ার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। টিম ম্যানেজম্যান্টের প্রতি পিসিবির এই আস্থাকে সমর্থন জানিয়েছে ক্রিকেট কমিটিও।
লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে সাবেক টেস্ট উইকেটরক্ষক সালিম ইউসুফের সভাপতিত্বে পিসিবির ক্রিকেট কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয় আজ। যাতে অনলাইন সেশনে যোগ দিয়েছিলেন উমর গুল আর ওয়াসিম আকরাম। ছিলেন পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খানও।
সভা শেষে পিসিবির ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান সেলিম ইউসুফ জানান, গত ১৬ মাসে পাকিস্তান পুরুষ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাই পাকিস্তানকে তিন কিংবা চার নম্বরের মধ্যেই দেখতে চান কিন্তু সেই অনুযায়ী পারফর্ম করতে পারছে না দল, স্বীকার করে নিয়েছেন তিনি।
তবে দলের নিষ্প্রভ পারফরম্যান্সের জন্য করোনাকেও বড় বাধা মনে করছে পিসিবির ক্রিকেট কমিটি। সেলিম ইউসুফ বলেন, ‘আমাদের দলের খারাপ পারফরম্যান্সের পেছনে কোভিড-১৯ মহামারির বড় একটা প্রভাব রয়েছে। কোভিড-১৯ প্রটোকল মেনে খেলার মতো কঠিন পরিস্থিতিতে শুধু পাকিস্তান নয়, বিশ্বের অনেক দলই পড়েছে। দলের কোচ এবং বড় ক্রিকেটাররা অনেকবারই এই প্রসঙ্গটি তুলেছেন।’
‘এটা তো ঠিক। সব পেশাদার এবং পারফরমার অ্যাথলেটদের আন্তর্জাতিক আঙিনায় সেরাটা দেয়ার জন্য প্রস্তুতির ভালো পরিবেশ দরকার। গত দুইটি সফরে আমরা সেটা পাইনি। কোভিড-মুক্ত দেশগুলোতে দুই সপ্তাহ রুমের ভেতর থাকার বাধ্যবোধকতাও মানতে হয়েছে।’
সেলিম ইউসুফ যোগ করেন, ‘সেইসঙ্গে বাবর আজম, ইমাম উল হক, শাদাব খানের মতো খেলোয়াড়দের আমরা টেস্ট সিরিজে পাইনি। ফাখর জামান তো সফরের আগেই ছিটকে পড়ে। এগুলো আমাদের দলের কম্বিনেশনে বড় প্রভাব ফেলেছে। তাতে ওভার অল পারফরম্যান্সও খারাপ হয়েছে।’
তাতে হেড কোচ মিসবাহ উল হক আর বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনুস এত সমালোচনায় পড়ার পরও এবারের মতো বেঁচে যাচ্ছেন। তবে কেবল এ যাত্রায়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠের সিরিজটি হবে তাদের জন্য ‘অগ্নিপরীক্ষা’।
এমএমআর/জিকেএস