বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট শব্দটির সঙ্গে প্রায় সব মানুষই পরিচিত।
ইন্টারনেট পরিষেবা না মিললে বহু মানুষের জগৎ থেমে যাবে এমনটা বলা যেতেই পারে কারণ ইন্টারনেটের বিস্তার এখন সর্বক্ষেত্রে।
বিশ্বকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে ইন্টারনেট। ইন্টারনেট হলো একটি ইলেকট্রনিক কমিউনিকেশন ডিভাইস যা বিশ্বব্যাপী মিলিয়ন কম্পিউটার কে সংযুক্ত করে রেখেছে।
আন্তর্জাল বা ইন্টারনেট যা নেট নামেও পরিচিত, তা বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত বহু কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সমষ্টি যেখানে আইপির মাধ্যমে ডাটা আদান প্রদান করা হয়।
১৯৬০ এর দশকে অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্ট এজেন্সি বা আরপা যা মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারের মধ্যে প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতিতে আরপানেটের এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে তোলে।
১৯৮৯ সালে সকলের ব্যবহারের জন্য আইপিএস দ্বারা উন্মুক্ত হয় ইন্টারনেট, এরপরে এর বিস্তার ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র, ভারতে ইন্টারনেটের ব্যাপক বিস্তৃতি ১৯৯০ এর পরবর্তী সময়ে।
১৯৯০ এর দশকের শেষের দিকে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল।
৩১ শে মার্চ ২০১১ পর্যন্ত ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল আনুমানিক ২.০৯ বিলিয়ন যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০.২ শতাংশ, ২০২০ জানুয়ারিতে সেই সংখ্যা এসে উপনীত হয়েছে আনুমানিক ৪.৫৪ বিলিয়ন, যা বিশ্ব জনসংখ্যার ৫৯ শতাংশ
দিনে দিনে এর প্রসারের মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে আধুনিক সময়ে ইন্টারনেট আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বহু কঠিন কাজকে ইন্টারনেট সহজ করে দিয়েছে, ইন্টারনেটের কারনে মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের খবর।
তাহলে বুঝলেন তো,
ইন্টারনেট মানে কি
?
ইন্টারনেটের
ব্যবহার
বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রয়োজন ইন্টারনেটের অনলাইনে বিল পেমেন্ট করতে, অনলাইন ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পেতে কিংবা অনলাইন শপিং সবকিছুর জন্যই প্রয়োজন ইন্টারনেটের।
কর্ম ক্ষেত্রে হোক বা শিক্ষাক্ষেত্রে বা দৈনন্দিন জীবনে যে কোন তথ্য সহজে বিশ্বের যেকোন প্রান্তে থাকা মানুষের কাছে পৌছে দেওয়া যায় ইমেইলের মাধ্যমে ইমেইল পাঠাতে হলে দরকার পরে ইন্টারনেটের, মোবাইল বা কম্পিউটারে যে কোন গান, সিনেমা দেখা, ভিডিও দেখা, গেম খেলার জন্য প্রয়োজন পড়ে ইন্টারনেট কানেকশনের।
দূর দেশে থাকা মানুষের সাথে ফোনে কথা বলা গেলেও কথা বলার সাথে সাথে তাকে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে ইন্টারনেট, ভিডিও কলের মাধ্যমে আমরা যেকোন মানুষের সাথে কথা বলার পাশাপাশি তাকে দেখতেও পারি।
বিশ্বের যেকোনো প্রান্তের চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নেওয়া হোক বা কাউকে শুভেচ্ছাবার্তা দেওয়া হোক সবই এখন হয় ভিডিও কলের মাধ্যমে তবে ইন্টারনেট কানেকশন না থাকলে তা সম্ভব নয়।
কর্ম ক্ষেত্রে কম্পিউটারের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত ইন্টারনেট বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি থেকে শুরু করে এবং গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন কালেক্ট করা সবকিছুই হয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে। আধুনিক যুগে ফ্রিল্যান্সিং গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট এর দ্বারা বাড়িতে বসে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব।
অনেকেই বিভিন্ন কারণে সময়ের অভাবে নিয়মিত ভাবে অনেক কোর্স করতে পারেন না তারা সহজেই বাড়িতে বসে অনলাইনে সমস্ত কোর্স সম্পন্ন করতে পারেন শুধুমাত্র ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে ঘরে বসেই ক্লাস করা সম্ভব।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইন্টারনেট পরিষেবা কার্যকারী হওয়ার দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে এর চাহিদা।
ইন্টারনেট
কিভাবে
কাজ
করে
আমরা ইন্টারনেট কি এবং ইন্টারনেটের দ্বারা কি কি কাজ হয় তার সঙ্গে সবাই মোটামুটি অবগত।
কিন্তু ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে তা আমরা অনেকেই জানিনা।
তথ্য সম্প্রসারের জন্য কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহার করে সার্ভার ও ক্লায়েন্ট ডেটার মাধ্যমে। সার্ভারের দ্বারা নেটওয়ার্কে তথ্য যোগান দেওয়া হয়। সার্ভারের মধ্যে যে স্টোরিজ এরিয়া থাকে তার সাথে সংযুক্ত থাকে অ্যাকসেস।
ইন্টারনেটের মাধ্যমে সার্ভারের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট ফাইল এবং সার্ভিস প্রবেশ করে হোস্ট কম্পিউটারে। ইন্টারনেট মূলত প্যাকেট ওরিয়েন্টেড নেটওয়ার্ক, প্যাকেটের মাধ্যমে বিভক্ত হয়ে যায় প্রেরিত ডেটা, এই নেটওয়ার্কগুলি যুক্ত থাকে একটি স্পেশাল কম্পিউটার দ্বারা যাকে বলা হয় রাউটার।
এই রাউটার ঠিক করে আপনার প্যাকেট বা ডেটা কোন দিকে পাঠাবে।
রাউটার জানে যে ডেটা বা প্যাকেট কোথায় যাচ্ছে, এবং সেখানে উপস্থিত থাকা এড্রেসটি হল আইপি বা ইন্টারনেট প্রটোকল যা প্যাকেটের মধ্যে বিভক্ত হয়ে ডেটা আইপির মাধ্যমে সঞ্চালিত হয়। এটি প্রোটোকল দ্বারা পরিচালিত তাহলো টিসিপি, ট্রান্সমিশন কন্ট্রোল প্রোটোকল।
IP অ্যাড্রেস হল একটি সার্বজনীন এড্রেস যা একটি কম্পিউটার তালিকা অনুযায়ী অন্যান্য কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে ব্যবহার হয়।
ইন্টারনেট এর মধ্যে কোন ব্যক্তির একাউন্টের অঞ্চল নির্ধারণ করে ডোমেইন নেম। ১৯৮৪ সালে ডোমেইন নেম সিস্টেম পরিচিত হয়েছিল।
আইপি অ্যাড্রেসের টেক্সট এর রূপ হল ডোমেইন নেম।
ডোমেইন নেমের উপাদানগুলি একটি ফুলস্টপ দ্বারা পৃথক হয় ঠিক আইপি অ্যাড্রেস এর মতই। নির্দিষ্ট ডোমেইন নেম ব্যবহারের ফলে ইন্টারনেট সার্ভার ডোমেইন নেম কে সহযোগী আই পি এড্রেসে বদলে দেয় ফলে ডেটা সঠিক কম্পিউটারে প্রবেশ করে।
IP অ্যাড্রেস – ২১৬.৫৮.২১৬.১৬৪
ডোমেইন নেম-
http://www.yahoo.com
ডোমেইন নেম বিভিন্ন প্রকার হয় যেমন – কমার্শিয়াল ক্ষেত্রে
.com, শিক্ষামূলক ক্ষেত্রে.edu, সরকারি ক্ষেত্রে.gov ইত্যাদি।
আধুনিক বিশ্বে জীবনযাত্রার সাথে সাথে সব কিছুরই যেমন আধুনিক রূপ প্রকাশ পাচ্ছে সেই জীবন প্রণালীর সাথে, সেই পৃথিবীর সাথে মানিয়ে নিয়ে চলতে দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে বিজ্ঞান থেকে গবেষণা, শিক্ষা থেকে যোগাযোগ সবকিছুকেই আরো এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে ইন্টারনেট।