শুনানির তারিখ দুই দফা পিছিয়ে যাওয়ার পর অবশেষে সিলেটের মুরারী চাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়েছেন আদালত। এর আগে মামলার বাদীপক্ষ অভিযোগপত্র পর্যালোচনার জন্য দুই দফা সময় প্রার্থনা করে। এতে পিছিয়ে যায় শুনানি। তবে গতকাল নির্ধারিত তারিখে অভিযোগপত্রের ওপর কোনো আপত্তি নেই বলে জানান বাদীর আইনজীবী।
এরপর সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মো. মোহিতুল হকের আদালত অভিযোগপত্র আমলে নেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রাশিদা সাইদা খানম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এবার অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হবে। তবে অভিযোগ গঠনের তারিখ ঠিক হয়নি।
গত ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে এ মামলার অভিযোগপত্র প্রদান করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য।
অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেকুল ইসলাম তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম রাজন মিয়াকে সরাসরি ধর্ষণে সম্পৃক্ত এবং রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান মাসুমকে ধর্ষণের সহযোগী হিসেবে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ আটজনই বর্তমানে জেলহাজতে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২৫ সেপ্টেম্বর বিকালে স্বামীকে নিয়ে শাহপরান মাজারে বেড়াতে গিয়েছিলেন নির্যাতনের শিকার তরুণী (২৫)। ফেরার সময় তারা গাড়ি থামিয়েছিলেন নগরের টিলাগড় এলাকার এমসি কলেজের প্রধান ফটকের সামনে। স্ত্রীকে প্রাইভেটকারে রেখে স্বামী পার্শ্ববর্তী দোকানে গিয়েছিলেন। ওইসময় প্রাইভেটকারটি ঘিরে ধরে কয়েকজন তরুণ। প্রাইভেটকারসহ ওই দম্পতিকে তারা নিয়ে যায় বালুচর এলাকার এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের ভেতরে। সেখানে স্বামীর সামনেই গাড়ির ভেতর সংঘবদ্ধভাবে তরুণীকে ধর্ষণ করে ছয় তরুণ। পরে তাদের মারধর করে টাকা–পয়সা ছিনিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। আটকে রাখে তাদের গাড়িও।
ঘটনার রাতেই নির্যাতিতার স্বামী বাদী হয়ে নগরের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন।
ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিনদিনের মধ্যে ছয় আসামিসহ সন্দেহভাজন আরো দুজনকে গ্রেফতার করে র্যাব ও পুলিশ।