মালয়েশিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি

Jagonews24

মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন মালয়েশিয়ার সুলতান আবদুল্লাহ সুলতান আহমাদ শাহ। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশটির অধিকাংশ এলাকায় প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন ব্যাপক বিধিনিষেধ আরোপ করার একদিন পর মঙ্গলবার রাজার কাছ থেকে এমন সিদ্ধান্ত এসেছে।

ইতোমধ্যে সেখানকার অধিকাংশ ব্যবসা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও বিপর্যয়ের মুখোমুখি রয়েছে। সোমবারের এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের কাছ থেকে অনুরোধ আসার পর জরুরি অবস্থা ঘোষণায় রাজি হন সুলতান আবদুল্লাহ আহমাদ শাহ। এ ঘোষণা চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত।

টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন বলেন, পার্লামেন্ট স্থগিত থাকবে এবং কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। প্রয়োজন হলে রাজা নতুন আইন সচল করতে পারবেন।

১০ মাস আগে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর মুহিউদ্দিনের সরকার নানা প্রতিকূলতায় পড়েছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বেসামরিক সরকারের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এটি কোনো সামরিক অভ্যুত্থান না এবং বলবৎ করা হবে না কারফিউ।

মহামারি নিয়ন্ত্রণে আসার পর সাধারণ নির্বাচন দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এমন একটা সময় তিনি এ ঘোষণা দিয়েছেন, তখন মুহিউদ্দিনের প্রধান জোটমিত্ররা সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। এতে সরকার পতন ও আগামী নির্বাচন দেয়ার প্রয়োজন পড়ত।

মহামারির মধ্যে নির্বাচন হলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকিতে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে। কঠোর লকডাউনের মাধ্যমে গত এক বছর করোনা নিয়ন্ত্রণে রেখেছে মালয়েশিয়া। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিল করার পর আক্রান্তের নতুন রেকর্ড গড়ছে।

রাজনৈতিক জীবন সাময়িক বাতিল হলেও এ ঘোষণায় বেসরকারি হাসপাতাল সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেয়ার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের চাপ নিতে না পারলে বেসরকারি হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে সরকার।

সেনাবাহিনী ও পুলিশের কাছ থেকেও অতিরিক্ত সহায়তা নেয়া হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। করোনা সংক্রমণ কমে গেলেই জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়া হবে। জরুরি ঘোষণা ক্ষমতায় টিকে থাকতে মুহিউদ্দিনের রাজনৈতিক চাল বলে সমালোচকরা দাবি করছেন। এতে সাধারণ মানুষের স্বাধীনতা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মাহাথির মোহাম্মদের মেয়ে মারিনা মাহাথির বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে সরকার নিজের ব্যর্থতার জানান দিয়েছে। মহামারি নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ হয়েছে। দেশ শাসন ও জনগণের প্রতি খেয়াল রাখতেও তারা ব্যর্থ। এদিকে রাত পোহালেই সমানতালে চলবে জরুরি অবস্থা ও লকডাউন।

এমআরএম/এমএস