মোবাইল অ্যাপে ভোক্তা ব্যয়ে রেকর্ড

Bonikbarta

২০২০ সালে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে ভোক্তা ব্যয় রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে। গত বছর অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর
গুগলের প্লে স্টোর
উভয় প্লাটফর্ম থেকে অ্যাপ কেনা, সাবস্ক্রিপশন এবং প্রিমিয়াম অ্যাপ ব্যবহারে ভোক্তারা ১১ হাজার ১০০ কোটি ডলার ব্যয় করেছেন, যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি। খবর দ্য হিন্দু।

মোবাইল ডিভাইস; বিশেষ করে স্মার্টফোনের প্রাণ বলা হয় বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনকে। এসব অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপের কিছু বিনা মূল্যে এবং কিছু অর্থ দিয়ে ব্যবহার করতে হয়। আবার বেশ কিছু অ্যাপের বিনা মূল্যের এবং পেইড উভয় ধরনের সংস্করণ পাওয়া যায়। চলতি বছর মোবাইল অ্যাপে ভোক্তা ব্যয় রেকর্ড বৃদ্ধির পাশাপাশি অ্যাপ স্টোর এবং প্লে স্টোর থেকে অ্যাপল এবং গুগলের রাজস্ব বেড়েছে যথাক্রমে ৬৫ এবং ৩০ শতাংশ। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা গেম, ফটো ভিডিও এবং সোস্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপে বেশি অর্থ ব্যয় করেছেন।

মোবাইল অ্যাপ বিশ্লেষক সংস্থা সেন্সর টাওয়ারের তথ্যমতে, গত বছর অ্যাপল ডিভাইস ব্যবহারকারী বিভিন্ন অ্যাপের জন্য অ্যাপ স্টোরে হাজার ২০০ কোটি ডলার এবং অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইস ব্যবহারকারী প্রয়োজনীয় অ্যাপের জন্য প্লে স্টোরে হাজার ৮৬০ কোটি ডলার ব্যয় করেছেন।

সেন্সর টাওয়ারের দাবি, গত বছর মোবাইল অ্যাপে মোট ভোক্তা ব্যয়ের বেশির ভাগ গেমিং বিভাগে চলে গেছে। গেমিং মোবাইল অ্যাপে ভোক্তা ব্যয় হাজার ৯৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। অ্যাপ স্টোর এবং প্লে স্টোরে গেমিং অ্যাপের জন্য ভোক্তারা যে ব্যয় করেছেন, তা মোট অ্যাপ ব্যয়ের প্রায় ৭২ শতাংশ। চীনভিত্তিক টেনসেন্টের অনার অব কিংস
হলো সর্বাধিক উপার্জনকারী আইওএস গেম অ্যাপ। অন্যদিকে গুগল প্লে স্টোরের সর্বাধিক উপার্জনকারী গেম অ্যাপ হলো মুন অ্যাকটিভের কয়েন মাস্টার গত বছর মোবাইল অ্যাপে মোট ভোক্তা ব্যয়ের প্রায় ১০০ কোটি ডলার গেছে পাঁচটি মোবাইল গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের হাতে।

গেম ক্যাটাগরির বাইরে গত বছর সর্বাধিক উপার্জনকারী অ্যাপগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে হালের জনপ্রিয় শর্ট ভিডিও তৈরি শেয়ারের সোস্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম টিকটক। চীনভিত্তিক বাইটডান্সের অ্যাপ বিভিন্ন দেশে নিষিদ্ধের মুখে থাকলেও গত বছর ৬০০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ১২০ কোটি ডলার উপার্জন করেছে। ৫১ কোটি ৩০ লাখ ডলার মুনাফা করে গত বছর জেনারেল ক্যাটাগরির সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অ্যাপ তালিকায় দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে অনলাইন ডেটিং অ্যাপ টিন্ডার। গত বছর গুগল নিয়ন্ত্রিত ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবের মুনাফা ৪৭ কোটি ৮০ লাখ ডলারে পৌঁছেছে। সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অ্যাপ তালিকায় তৃতীয় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ইউটিউব। এছাড়া ৩১ কোটি ৪০ লাখ ৩০ কোটি ডলার মুনাফা নিয়ে বিশ্বের সর্বোচ্চ উপার্জনকারী অ্যাপ তালিকায় যথাক্রমে চতুর্থ পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে ডিজনি প্লাস টেনসেন্ট ভিডিও। এছাড়া অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে সর্বাধিক উপার্জনকারীর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে গুগলের ক্লাউড স্টোরেজ সেবা দেয়া গুগল ওয়ান। গত বছর গুগল ওয়ান এক বছর আগের তুলনায় ৪১ দশমিক শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ৪৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার আয় করেছে।

অ্যাপ স্টোরে ভোক্তা ব্যয়ে গেম বাদ দিয়ে বিনোদন বিভাগের অ্যাপগুলো শীর্ষে রয়েছে। পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ৫৩০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে প্লে স্টোরে গেম বাদ দিয়ে ভোক্তা ব্যয়ে শীর্ষে রয়েছে সামাজিক যোগাযোগ অ্যাপগুলো। আগের বছরের তুলনায় গত বছর ৭১ দশমিক শতাংশ বেড়ে ১২০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।

সেন্সর টাওয়ারের হিসাব অনুযায়ী, অ্যাপ স্টোর প্লে স্টোর মিলিয়ে গত বছর অ্যাপ্লিকেশন ইনস্টলের ক্ষেত্রেও রেকর্ড হয়েছে। ২০১৯ সালের তুলনায় ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে গত বছর অ্যাপ ইনস্টল ১৪ হাজার ৩০০ কোটিতে পৌঁছেছে। অ্যাপ স্টোরে গেমের পর সর্বাধিক ইনস্টল করা হয়েছে ফটো ভিডিও বিভাগের অ্যাপগুলো। ২০১৯ সালের ২৩০ কোটি থেকে গত বছর অ্যাপগুলো ইনস্টল দশমিক শতাংশ বেড়ে ২৫০ কোটিতে পৌঁছেছে। অন্যদিকে গুগল প্লে স্টোরে গেমের পর টুলস বিভাগের অ্যাপগুলো সর্বাধিক ইনস্টল করা হয়েছে। ক্যাটাগরির অ্যাপগুলো গত বছর ডাউনলোডের ক্ষেত্রে প্রথমবারের মতো ৭০০ কোটির ঘর স্পর্শ করেছে। ২০১৯ সালে অ্যাপগুলো ডাউনলোডের সংখ্যা ছিল ৬০০ কোটি।

গেমের বাইরে অ্যাপ স্টোরে ভিডিও কনফারেন্সিং সেবা দেয়া জুম প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চসংখ্যক ডাউনলোডের মুখ দেখেছে। সর্বাধিক ডাউনলোড হওয়া টিকটকের পরই জুমের অবস্থান। গত বছর ২১ কোটি ২৫ লাখ আইফোন ব্যবহারকারী অ্যাপটি ইনস্টল করেছেন। অন্যদিকে গুগলের প্লাটফর্মে টিকটকের পর সর্বাধিক ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের জায়গা দখল করেছে হোয়াটসঅ্যাপ। প্লে স্টোরে সর্বাধিক ডাউনলোড হওয়া তালিকায় টিকটক, হোয়াটসঅ্যাপ ফেসবুকের পর জুমের অবস্থান।