২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার লক্ষ্যে গতকাল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট, দি ইউনিয়ন এবং ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের উদ্যোগে দিনব্যাপী ‘কনফারেন্স অন সাসটেইনেবল টোব্যাকো কন্ট্রোল ইন বাংলাদেশ’
সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সম্মেলনে এক বক্তা বলেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে কম তামাকের কর বাংলাদেশে। তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকের কর বাড়ানোর বিকল্প নেই।
এ সম্মেলনে সারা দেশ থেকে শতাধিক সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, পরিবেশবিদ, গণমাধ্যম প্রতিনিধি, কৃষিবিদ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সরাসরি ও ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন।
ওই সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণে আর্থিক জোগান, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনের দুর্বল দিক ও সংশোধন, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন, তামাকের ওপর কর বৃদ্ধি, তামাক চাষ নিয়ন্ত্রণ ও তামাক কোম্পানির প্রভাব থেকে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সব নীতি সুরক্ষার ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা করা হয়।
সম্মেলনে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন জাতীয় যক্ষ্মা নিরোধ সমিতির সভাপতি মোজ্জাফ্ফর হোসেন পল্টু, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল
মালেক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রাণ গোপাল দত্ত, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী সংসদ সদস্য গাইবান্ধা–১, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল সমন্বয়কারী (যুগ্ম সচিব) মো. জিল্লুুর রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোটের সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
আরেফিন সিদ্দিক বলেন, অধূমপায়ীদের তুলনায় ধূমপায়ীদের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। ক্রমবর্ধমান রোগের জন্য জনসাধারণকে মানসম্মত চিকিৎসা প্রদান রাষ্ট্র ও সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এমতাবস্থায় স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। রাজস্ব আয়ের দোহাই দিয়ে তামাকের প্রসারের সুযোগ বন্ধ করতে হবে।
ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, পৃথিবীতে সবচেয়ে কম তামাকের কর বাংলাদেশে। এ কর কাঠামো দিয়ে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাকের কর বাড়ানোর বিকল্প নেই।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম গতিশীল রাখতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। তামাক থেকে প্রাপ্ত সারচার্জ আমরা তামাক নিয়ন্ত্রণের কাজে ব্যবহার করতে পারছি না। এজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
প্রাণ গোপাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুসারে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে কাজ করতে হবে। জনস্বাস্থ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তামাক কোম্পানিগুলোকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
ফরিদা আখতার বলেন, বিশ্বে তামাক উৎপাদনে বাংলাদেশ ১২তম। শুধু স্বাস্থ্য নয় দেশের কৃষি, পরিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য হুমকি এ তামাক। তামাক নিয়ন্ত্রণ করে আমাদের খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে।