বাংলাদেশে কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার বছরে প্রায় ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের, যা বছরে ১০ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দেশের এ বিশাল বাজারে ভারতের বিনিয়োগের বড় ধরনের সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে ভারতের মাহিন্দ্র অ্যান্ড মাহিন্দ্র লিমিটেড বাংলাদেশে কৃষি যন্ত্রপাতির সংযোজন কারখানা করবে। প্রান্তিক পর্যায়ে যন্ত্রের ব্যবহার জনপ্রিয় ও রক্ষণাবেক্ষণ সহজতর করতে প্রশিক্ষিত জনবল তৈরির ব্যাপারেও উদ্যোগ গ্রহণ করবে প্রতিষ্ঠানটি।
মাহিন্দ্র অ্যান্ড মাহিন্দ্র লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও পবন গোয়েঙ্কা গতকাল কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানান। গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত ‘কৃষি খাতে ভারত–বাংলাদেশের সহযোগিতা বিষয়ক ডিজিটাল কনফারেন্স’–এর ফলোআপ হিসেবে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কৃষি শ্রমিকের ঘাটতি দিন দিন বাড়ছে। কৃষি শ্রমিকরা কৃষিকাজ থেকে শিল্পসহ অন্যান্য খাতে চলে যাচ্ছেন। ফলে শ্রমিকের দাম অনেক বেশি ও কৃষক কৃষিকাজে লাভবান হচ্ছে না। সেজন্য সরকার কৃষি যান্ত্রিকীকরণে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে। সরকার এ বছর ২০০ কোটি টাকার মাধ্যমে ৫০–৭০ শতাংশ ভর্তুকিতে কৃষকদের কম্বাইন্ড হারভেস্টার, রিপারসহ কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছে। এছাড়া ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে প্রায় ৫১ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি দেয়া হবে।
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে কৃষিমন্ত্রী জানান, মাহিন্দ্র সংযোজন কারখানা স্থাপনের পাশাপাশি এদেশের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও যারা খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করছে তাদেরকেও যন্ত্রাংশ তৈরির দায়িত্ব প্রদান করবে, যাতে করে স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোক্তা তৈরি হয়। কৃষি যন্ত্রপাতির দাম অনেক বেশি হওয়ায় কৃষকরা অনেক ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি কিনতে পারেন না। এটি বিবেচনায় নিয়ে তারা বাংলাদেশের কৃষকদের ঋণ দেয়ার চিন্তাভাবনাও করছে। বাংলাদেশে যান্ত্রিকীকরণে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অনেক। সেজন্য মাহিন্দ্র এখানে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে। আজকে যে বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে তা বাস্তবে রূপ দিতে পারলে যান্ত্রিকীকরণে সাফল্য আসবে। দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে তা বিরাট ভূমিকা রাখবে।
গতকালের বৈঠকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, অতিরিক্ত সচিব ড. মো. আবদুর রৌফ, বিএডিসির চেয়ারম্যান মো. সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। মাহিন্দ্র অ্যান্ড মাহিন্দ্র লিমিটেডের ফার্ম ইকুইপমেন্ট সেক্টরের (এফইএস) প্রেসিডেন্ট হেমন্ত সিক্কা, এফইএসর সিইও প্রকাশ ওয়াকানকার, বাংলাদেশের কান্ট্রি হেড রবিন কুমার দাশসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা এ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।