প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের ৩৩ দিন পর দেশে নভেল করোনাভাইরাসে দৈনিক সংক্রমণ শনাক্তের হার ৬ শতাংশের ওপরে উঠেছিল। ক্রমাগতভাবে বেড়ে এক পর্যায়ে দৈনিক শনাক্তের হার চলে গিয়েছিল ২০ শতাংশের ওপরে, যা অব্যাহত ছিল আগস্ট পর্যন্ত। এরপর হারটি ক্রমান্বয়ে কমেছে। চলতি মাসে তা ৬ শতাংশের নিচে চলে আসে। আর গতকাল নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৫ শতাংশ, যা গত নয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। সর্বনিম্ন শনাক্তের দিনে দেশে নতুন করে আরো ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৭১৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গতকালের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১১৫টি আরটি–পিসিআর ল্যাব, ২৮টি জিন–এক্সপার্ট ল্যাব ও ৫১টি র্যাপিড অ্যান্টিজেন ল্যাবে ১৪ হাজার ৩৬৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ৭১৮ জনের শরীরে নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ২৪ হাজার ২০ জনে। এ পর্যন্ত সরকারি ব্যবস্থাপনায় ২৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৬৬টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৭ লাখ ১৭ হাজার ৪১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। গতকাল নতুন করে ১৬ জনের মৃত্যু হওয়ায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৮১৯। মোট মৃত্যুহার ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ। গতকাল নতুন করে ৯৬৩ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এতে মোট সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৬৮১।
গতকাল মারা যাওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১০ জন পুরুষ আর নারী ছয়জন। সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃতদের বয়স বিবেচনায় ১৪ জনের বয়সই ষাটোর্ধ্ব। একজন করে দুজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ ও ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। মৃতদের মধ্যে ১০ জন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। বাকিদের মধ্যে দুজন সিলেট বিভাগের এবং একজন করে চারজন চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে মারা যাওয়া ৭ হাজার ৮১৯ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৯৩৭ জন পুরুষ এবং ১ হাজার ৮৮২ জন নারী।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী কভিড–১৯ আক্রান্তের সংখ্যার দিক দিয়ে ২৭তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। শীর্ষস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গতকাল রাত ১১টা পর্যন্ত হালনাগাদকৃত তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ ৪৫ হাজারেরও বেশি মানুষের। এ তালিকায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভারত ও ব্রাজিল। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৭তম। এ তালিকায় শীর্ষ তিনটি অবস্থানে থাকা দেশগুলো হচ্ছে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও ভারত।
প্রসঙ্গত, গতকাল পর্যন্ত বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে বিশ্বে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৯ কোটি ১০ লাখ ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৯ লাখ ৪৮ হাজার।