নিজস্ব প্রতিবেদক : সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র বাদীর আপত্তি না থাকায় আদালত তা আমালে নিয়েছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মোহিতুল হক আলোচিত এই মামলার চার্জ গঠনের জন্য আগামী রবিবার (১৭ জানুয়ারি) নির্ধারণ করেছেন। তবে ওইদিন আসামীপক্ষ আদালতে ডিসচার্জ পিটিশন দাখিল করলে পিটিশনের উপর শুনানী হবে। চার্জ গঠন হবে না। মঙ্গলবার একই আদালতে ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র গৃহিত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, অভিযোগপত্রের উপর আমাদের কোন আপত্তি না থাকায় আদালত তা আমলে নিয়েছেন। আলোচিত এই মামলায় পুলিশ সকল আসামীদের যথাযথভাবে অর্ন্তভুক্তি করেছে। আগামী ১৭ জানুয়ারি আদালতে চার্জ গঠন করা হবে। তবে এই মামলায় আসামীপক্ষ যদি আদালতে ডিসচার্জ পিটিশন দাখিল করেন তা হলে অভিযোগ গঠন না হয়ে পিটিশনের শুনানী হবে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের পিপি রাশিদা সাঈদা খানম। তিনি বলেন, আদালত এমসি কলেজের ধর্ষণ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে আগামী চার্জ গঠনের জন্য ১৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করেছেন আদালতের বিচারক। এই মামলার অভিযোগপত্রে বাদী পক্ষের কোন আপত্তি না থাকায় আদালত অভিযোগপত্রটি আমলে নেন।
মামলার বাদি মাইদুল ইসলাম জানান, পুলিশের দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে আমাদের কোন আপত্তি ছিল না। তাই আদালত তা আমলে নিয়েছেন। আসামীদের কঠোর শাস্তির দেয়ার জন্য তিনি আদালতের কাছে বিনীত অনুরোধ জানান।
আদালত সূত্র জানায়, গত রবিবার বাদীপক্ষের আইনজীবী অভিযোগপত্র পর্যালোচনার জন্য একটি আবেদন করে সময় চাইলে আদালত দুই দিনের সময় নির্ধারণ করে দেন। এর আগে ৩ জানুয়ারি মামলার অভিযোগ গঠনের প্রথম শুনানি শেষে এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। ওই তারিখে বাদীপক্ষের আইনজীবী অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় সময় প্রার্থনা করেছিলেন। কিন্তু এ সময়ের মধ্যে মামলার নথিপত্র বাদীপক্ষ না পাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র পর্যালোচনার জন্য আবেদন করেন। আদালত তা মঞ্জুর করেন। অভিযোগপত্র পর্যালোচনায় আদালতে দাখিল করা বাদীপক্ষের আবেদনে মামলার অভিযোগপত্র, সিজারলিস্ট, জিম্মানামা, স্ক্যাচমেপ, ইনডেক্স, ইনডেক্সের সূচি ও ব্যাখ্যা, মেডিকেল রিপোর্ট, ডিএনএ রিপোর্ট, আসামিদের দোষ স্বীকারমূলক জবানবন্দি, ২২ ধারার জবানবন্দি, ১৬৪ ধারার জবানবন্দি ও আসামিদের রিমান্ড আবেদনের জাবেদা নকল বাদী পক্ষের আইনজীবীকে দেয়ার জন্য আদালত নির্দেশে দেন।
গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে এক তরুণীকে (২০) দল বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে গেলেও তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ও র্যাব। গ্রেফতারের পর তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
গত ৩ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের আট নেতা-কর্মীকে অভিযুক্ত করে মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর পুলিশের শাহপরান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য। অভিযোগপত্রে সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল ও মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজনকে দল বেঁধে ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আসামি রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুমকে ধর্ষণে সহায়তা করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। আট আসামিই বর্তমানে কারাগারে।
সিলেট ভিউ ২৪ ডটকম/ পিটি-৭